বিশ্বের জনসংখ্যার ৬৮ শতাংশ ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু। যদিও এই হতবাক পরিসংখ্যান আপনাকে অন্তর্ভুক্ত নাও করতে পারে, আপনার শরীর এখনও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া অনুভব করতে পারে। আপনি দুগ্ধজাত দ্রব্যের প্রতি সংবেদনশীল বা অ্যালার্জির কিনা তা জানার একটি উপায় হল আপনার শরীরে কতটা শ্লেষ্মা তৈরি হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া। দেখে মনে হতে পারে যে অনেক সেলিব্রিটি এবং পেশাদার ক্রীড়াবিদরা এই মুহূর্তে তাদের সাইনাসকে সাহায্য করার জন্য দুগ্ধজাত খাবার খাচ্ছেন এবং শ্লেষ্মা একটি বড় কারণ।
তিন বছর আগে, বোন ক্লো এবং হ্যালি বেইলি, পপ তারকা জুটি ক্লো এক্স হ্যালে (বেয়ন্সের রেকর্ড লেবেলে স্বাক্ষরিত) এবং সিটকম সিরিজের তারকারা গ্রোন-ইশ নামে পরিচিত, PETA-এর সাথে একটি সাক্ষাত্কারে শেয়ার করেছিলেন যে যাওয়ার পর থেকে নিরামিষাশীরা, তারা তাদের ভোকাল পারফরম্যান্স উন্নত করতে সক্ষম হয়েছে৷
দুজনেই রিপোর্ট করেছেন যে "সব সময় অতিরিক্ত শ্লেষ্মা জমা হচ্ছে না।" ভালো কথা, যেহেতু ছোট বোন হ্যালি বর্তমানে দ্য লিটল মারমেইডের একটি লাইভ-অ্যাকশন অভিযোজনের চিত্রগ্রহণ করছেন, প্রিন্সেস এরিয়েলের চরিত্রে। কেউ কেবল কল্পনা করতে পারে যে কীভাবে প্রিন্সেস অ্যারিয়েলের সামুদ্রিক জাদুকরের সাথে দর কষাকষি করার ক্ষমতা তার গলায় অত্যধিক কফের সাথে দুর্বল হয়ে পড়েছিল।
বাস্কেটবলের খবরে, এনবিএ মিলওয়াকি বুকস তারকা জরু হলিডে সম্প্রতি দ্য বিটকে বলেছেন যে তিনি এবং তার স্ত্রী, পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় লরেন হলিডে যখন জানতে পেরেছিলেন যে তাদের মেয়ে ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু, তারা উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুগ্ধজাত বিকল্পের দিকে মনোনিবেশ করেছে, আবিষ্কার করেছে পুরো পরিবারের জন্য উপযুক্ত বিকল্প হিসাবে লহরী পানীয়।স্যুইচ করার পরে, তিনি গেমের পরে উন্নত পুনরুদ্ধারের সময় লক্ষ্য করেছেন, যোগ করেছেন যে এটি অনুনাসিক সমস্যাগুলিতেও সহায়তা করেছে। “কখনও কখনও আমি যখন দুগ্ধ পান করি, তখন আমার প্রচুর শ্লেষ্মা তৈরি হয়, এবং যেহেতু আমি দুগ্ধজাত ছিলাম তা চলে গেছে। আমি ভাল, হালকা অনুভব করি এবং আমার আরও শক্তি আছে, ” সে বলে৷
নোভাক জোকোভিচ, বর্তমানে বিশ্বের নং 1 টেনিস প্লেয়ার হিসাবে র্যাঙ্কিং করেছেন, ক্রমাগত অ্যালার্জির সমস্যাগুলি রিপোর্ট করেছেন, এমনকি তাকে আরও ভালভাবে শ্বাস নিতে সহায়তা করার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়েছে৷ নাকের অস্ত্রোপচারের সাথে তার ওয়ার্কআউটগুলি পরিবর্তন করার সংমিশ্রণ যখন স্বস্তি আনেনি, তখন তিনি একজন ডাক্তারের সাহায্য চেয়েছিলেন যিনি তার খাদ্য বিশ্লেষণ করেছিলেন এবং গ্লুটেন, দুগ্ধজাত খাবার এবং পরিশোধিত চিনি সহ যে খাবারগুলিতে তিনি প্রতিক্রিয়া করছেন তার একটি তালিকা আবিষ্কার করেছিলেন। খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন এবং দুগ্ধজাত খাবার বাদ দেওয়ার পরে, জোকোভিচ অবিলম্বে ভাল বোধ করার কথা জানিয়েছেন।
যদিও এগুলিকে গল্পের মতো মনে হতে পারে, এই প্রতিযোগীরা একা নন৷ অলিম্পিক সাইক্লিস্ট ডটসি বাউশের নেতৃত্বে "Switch4Good" নামক একটি আন্দোলনে শত শত অ্যাথলিট গঠিত, যিনি 2018 সালে, 10 জন অলিম্পিয়ানের মধ্যে 9 জন অলিম্পিয়ান দুধ পান করে বড় হয়েছেন এমন একটি দুধের বাণিজ্যিক দেখার পরে, একটি বাণিজ্যিক বৈশিষ্ট্যের সাথে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যে তারা দুগ্ধ-মুক্ত অলিম্পিয়ানদের পছন্দ করে তাদের স্বাস্থ্য, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং কর্মক্ষমতা উন্নত করতে দুগ্ধ-মুক্ত।
দুগ্ধ-মুক্ত বিকল্পে স্যুইচ করার পরে ভাল বোধ করার এবং আরও ভাল শ্বাস নিতে সক্ষম হওয়ার এই দাবিগুলি কি দুধে পাওয়া ল্যাকটোজ, গরুর দুধের অ্যালার্জি বা অন্য কিছুতে অসহিষ্ণুতা হতে পারে? গবেষণা যা বলে তা এখানে।
ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা এবং দুধের অ্যালার্জির মধ্যে পার্থক্য কী?
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজেস অনুসারে, বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় 68 শতাংশের কিছু মাত্রায় ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা রয়েছে। যারা ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু তারা ল্যাকটোজ হজম করার জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম ল্যাকটেজ তৈরি করতে পারে না - দুধে পাওয়া এক ধরনের চিনি। দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে এবং এর মধ্যে রয়েছে ফোলাভাব, গ্যাস, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, পেটে ব্যথা, পেটে গর্জন এবং বমি হওয়া। শ্লেষ্মা উত্পাদন, তবে, ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতার একটি পরিচিত লক্ষণ নয়। কিন্তু দুধের অ্যালার্জির কী হবে?
দুধের প্রতি অ্যালার্জি ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতার চেয়ে আলাদা এবং এর আরও গুরুতর পরিণতি হতে পারে।এটি শিশু এবং ছোট শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ অ্যালার্জিগুলির মধ্যে একটি। দুধের অ্যালার্জির সাথে, ইমিউন সিস্টেম দুধে পাওয়া প্রোটিনকে আক্রমণকারী হিসাবে উপলব্ধি করে, হিস্টামাইন নামক রাসায়নিকগুলিকে সংকেত দেয় যা অ্যালার্জির লক্ষণ সৃষ্টি করে, যেমন শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্ট, অ্যানাফিল্যাক্সিস, বমি, আমবাত এবং ঠোঁট ফোলা। গবেষণা দেখায় যে ছোট বাচ্চাদের দুধের অ্যালার্জি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই সমাধান হয়ে যায় এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে .5 শতাংশেরও কম আক্রান্ত হয়। যাইহোক, মায়ো ক্লিনিকের মতে, যেসব শিশুর দুধে অ্যালার্জি আছে তাদের খড় জ্বর হওয়ার ঝুঁকি বেশি, যার উপসর্গ যেমন নাক বন্ধ হওয়া, নাক দিয়ে পানি পড়া, হাঁচি এবং ক্লান্তি থাকতে পারে।
সাইড নোট: যারা দুধের অ্যালার্জিতে ভুগছেন তাদের জন্য, দুধের প্রধান দুটি প্রোটিন হল কেসিন এবং হুই, যা অন্যান্য অনেক খাবারেও লুকিয়ে রাখতে পারে, যেমন কুকিজ, ক্র্যাকার, এমনকি নন-ডেইরি ক্রিমার হিসাবে, তাই আপনি যদি অ্যালার্জির কারণে দুধ এড়িয়ে চলেন তবে লেবেলগুলি সাবধানে পরীক্ষা করতে ভুলবেন না।
দুগ্ধ এবং শ্লেষ্মা উৎপাদনের মধ্যে সংযোগ
দুগ্ধ সেবন এবং আপনার নাক ও গলায় কফের অস্বস্তিকর অনুভূতির মধ্যে সম্পর্ক আছে কি না তা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বিজ্ঞান মিশ্রিত। 1988 সালের একটি প্রাথমিক গবেষণায় রাইনোভাইরাস -2 (একটি ভাইরাস যা আপনাকে সমস্ত সাধারণ ঠান্ডা সিস্টেম, যেমন একটি সর্দি বা গলা ব্যাথা দিতে পারে) সহ অংশগ্রহণকারীদের টিস্যু ওজন করে শ্লেষ্মা উৎপাদনের তদন্ত করে এবং তাদের দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবারও রেকর্ড করে। ফলাফলগুলি দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ এবং শ্লেষ্মা নিঃসরণের ওজনের মধ্যে কোনও উল্লেখযোগ্য সম্পর্ককে নির্দেশ করে না, তবে একটি প্রাথমিক প্রশ্নাবলীতে, 27.5 শতাংশ লোক সর্দি-কাশির সময় দুগ্ধজাত খাবারের পরিমাণ হ্রাস করার কথা জানিয়েছে এবং তাদের মধ্যে 80 শতাংশ বলেছে যে এটি অতিরিক্ত শ্লেষ্মা তৈরি করে বলে মনে করেছিল। , নিশ্চিত করে যে লোকেরা কাল্পনিকভাবে দুগ্ধ সেবন এবং স্টাফ আপ বোধের মধ্যে একটি কারণ এবং প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বাস করে। সেই একই গোষ্ঠীও দুগ্ধজাত দ্রব্য এড়ায় না এমন গোষ্ঠীর চেয়ে বেশি যানজট ব্যবস্থার রিপোর্ট করেছে, কিন্তু তবুও, কোনও উল্লেখযোগ্য সংস্থান নির্ধারণ করা হয়নি।
2019 সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা শ্লেষ্মা উৎপাদনের উপর দুগ্ধ বনাম নন-ডেয়ারির এই স্ব-প্রতিবেদিত প্রভাব পরীক্ষা করে। একটি ডাবল-ব্লাইন্ডেড ডিজাইনে, 108 জন অংশগ্রহণকারীকে তাদের নাসোফ্যারিঞ্জিয়াল ক্ষরণগুলি 1 থেকে 100 পর্যন্ত স্কেলে স্কোর করতে বলা হয়েছিল, তারা না জেনে তারা দুগ্ধজাত বা দুগ্ধজাত পরিপূরক গোষ্ঠীর অংশ কিনা। দুগ্ধ-মুক্ত খাদ্য স্ব-প্রতিবেদিত শ্লেষ্মা নিঃসরণে উল্লেখযোগ্য হ্রাসের সাথে যুক্ত ছিল।
কিন্তু এটি ছিল 2009 সালের আগের একটি গবেষণা যা দুগ্ধ-প্ররোচিত শ্লেষ্মা উৎপাদনের পিছনে প্রকৃত প্রক্রিয়াটি অন্বেষণ করেছিল। গবেষকরা অনুমান করেছিলেন যে এটি এমন পরিস্থিতির শৃঙ্খল হতে পারে যা শ্লেষ্মা অতিরিক্ত উত্পাদনের দিকে পরিচালিত করে। প্রথমত, ব্যক্তিকে A2 দুধের বিপরীতে A1 দুধ খেতে হবে। দ্বিতীয়ত, শ্লেষ্মা উৎপাদন বাড়াতে দেখানো একটি অতিরিক্ত প্রোটিন, যাকে বলা হয় বিটা-ক্যাসোমরফিন-একটি পেপটাইড যা প্রদাহ সৃষ্টির জন্য অনুমান করা হয়েছে-কে সঞ্চালন করতে হবে, এবং অবশেষে, অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য দায়ী জিনের অভিব্যক্তিকে সক্রিয় করার জন্য শ্বাসনালীতে নির্দিষ্ট কিছু টিস্যুকে স্ফীত করতে হবে। .এই গবেষণাটি ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে যে কেন একটি উপগোষ্ঠী শ্বাসযন্ত্রের শ্লেষ্মা উৎপাদনের উন্নতির পাশাপাশি হাঁপানির সাথে সম্পর্কিত উপসর্গগুলি লক্ষ্য করে যখন তারা তাদের খাদ্য থেকে দুগ্ধজাত খাবার বাদ দেয়৷
নীচের লাইন: দুগ্ধজাত খাবার শ্লেষ্মা উৎপাদনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে এই দাবিকে সমর্থন করার জন্য বিজ্ঞান রয়েছে। আপনি যদি এক গ্লাস দুধ বা আইসক্রিমের বাটি পরে একই সংবেদন অনুভব করেন, তাহলে দুগ্ধজাত খাবার বাদ দেওয়ার কথা বিবেচনা করুন এবং আপনার কেমন লাগছে তা নোট করুন।
ক্যাসিন, হুই এবং ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতার সাথে সংযোগ
গরুয়ের দুধে বিভিন্ন ধরণের প্রোটিন থাকে যেমন কেসিন এবং হুই-A1 এবং A2 প্রোটিন এক ধরনের কেসিন। A1 ভেরিয়েন্টটি বেশি পরিমাণে বিটা-ক্যাসোমরফিন নিঃসরণ করে বলে মনে করা হয়, যা হজমের সমস্যা এবং প্রদাহের কারণ হতে পারে। দোকানে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ গরুর দুধে A1 এবং A2 উভয় প্রোটিন থাকে, কিন্তু আজ আপনি A2 দুধ খুঁজে পেতে পারেন, যাতে A1 নেই।
2014 সালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা একটি ডাবল-ব্লাইন্ড, এলোমেলো ক্রসওভার স্টাডির মাধ্যমে A1 যন্ত্রণার পিছনে তত্ত্বটি পরীক্ষা করে।ল্যাকটোজ-অসহনশীল বলে পরীক্ষা করা বিষয়গুলিকে দুই সপ্তাহের জন্য শুধুমাত্র A2 বা A1 এবং A2 উভয়ের সাথে দুধ দেওয়া হয়েছিল। ওয়াশআউট পিরিয়ডের পরে, বিষয়গুলিকে আরও দুই সপ্তাহের জন্য বিপরীত দেওয়া হয়েছিল।
গবেষকরা উপসংহারে পৌঁছেছেন যে A1 ধারণকারী দুধের ব্যবহার বৃহত্তর গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা এবং আরও প্রদাহ-সম্পর্কিত বায়োমার্কারের সাথে যুক্ত ছিল; যদিও A2 সেবন অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এই উপসর্গগুলিকে বাড়িয়ে তোলেনি৷
